আসন্ন ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনয়ন প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত ধাপে প্রবেশ করেছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সরাসরি তত্ত্বাবধানে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে প্রার্থী চূড়ান্ত করার কাজ চলমান রয়েছে। বিএনপির নীতিনির্ধারকরা এবারের নির্বাচনে তরুণ নেতৃত্ব, তৃণমূল সংযোগ, আনুগত্য, শৃঙ্খলা ও চারিত্রিক গ্রহণযোগ্যতাকে প্রাধান্য দিয়ে মনোনয়ন প্রক্রিয়া পরিচালনা করছেন।
এই প্রেক্ষাপটে যশোর জেলার গুরুত্বপূর্ণ আসন ৮৫ যশোর-১ (শার্শা) নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা—এমন একজন নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া হোক, যিনি দলের আদর্শে অনড়, সৎ ও ত্যাগী।
এই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন একজন পরিচিত মুখ—সাবেক সংসদ সদস্য, বর্ষীয়ান নেতা মফিকুল হাসান তৃপ্তি।
মফিকুল হাসান তৃপ্তি ১৯৬০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি যশোর জেলার শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া সনাতনকাঠি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাগআঁচড়া ইউনাইটেড স্কুল থেকে এসএসসি ও যশোর সরকারি এমএম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে অনার্সসহ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতিতে যুক্ত হন। ছাত্রজীবনে এসএম হল শাখা ছাত্রদলের সদস্য হিসেবে তার রাজনীতির সূচনা ঘটে। পরবর্তীতে তিনি একই হলের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সদস্য, সহ-সম্পাদক এবং যুগ্ম সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
ছাত্ররাজনীতি থেকে উঠে এসে মফিকুল হাসান তৃপ্তি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এবং দপ্তর সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন। একইসঙ্গে তিনি কেন্দ্রীয় কৃষক দলের নেতার ভূমিকা পালন করেন। বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক থাকাকালে তিনি শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৬ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি যশোর-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়া ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি বিএনপির প্রার্থী ছিলেন।
দীর্ঘদিন ধরে শার্শা উপজেলার রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থেকে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন মফিকুল হাসান তৃপ্তি। তার বিরুদ্ধে কখনও দুর্নীতি, সন্ত্রাস বা চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠেনি। বরং এলাকার মানুষ বলেন, “তৃপ্তি ভাই আমাদের সুখে-দুঃখে ছায়ার মতো পাশে থেকেছেন।”
দলের প্রতি আনুগত্য, জনসম্পৃক্ততা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং নেতৃত্বের দক্ষতা বিবেচনায় স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করছেন, বিএনপির মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে তৃপ্তি অন্যতম যোগ্য প্রার্থী।
বিএনপির ঘোষিত মনোনয়ন নীতিমালার আলোকে মফিকুল হাসান তৃপ্তির রাজনৈতিক জীবন ও ব্যক্তিত্ব একটি পূর্ণাঙ্গ মানদণ্ডে উত্তীর্ণ। তাই তৃণমূল কর্মী-সমর্থক থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ের নেতাদের মাঝেও শোনা যাচ্ছে এক কণ্ঠস্বরে একটি দাবি—
"আমরা চাই মফিকুল হাসান তৃপ্তি হোন আগামী যশোর-১ (শার্শা) এর এমপি।"