বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও যশোর-১ (শার্শা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মফিকুল হাসান তৃপ্তি প্রায় ৪৮ বছরের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে জনসেবাকে জীবনের মূলমন্ত্র হিসেবে নিয়েছেন। ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসে জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পৌঁছানো এই নেতার জীবনকাহিনি যেমন সংগ্রাম ও সাফল্যের গল্পে ভরা, তেমনি অনুপ্রেরণারো দৃষ্টান্ত।
জন্ম ও শিক্ষা জীবন:১৯৬০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি যশোর জেলার শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া সনাতনকাঠি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মফিকুল হাসান তৃপ্তি। পিতা তোফাজ্জল হোসেন ছিলেন কৃষক, মাতা রিজিয়া খাতুন ছিলেন গৃহিণী। পারিবারিকভাবে রাজনৈতিক আবহে বেড়ে ওঠা তৃপ্তি মহোদয়ের চাচা আলী তারেকও ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ।
তিনি বাগআঁচড়া ইউনাইটেড স্কুল থেকে এসএসসি, যশোর সরকারি এম.এম. কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন।
ছাত্র রাজনীতি থেকে জাতীয় রাজনীতি:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। এসএম হল ছাত্রদলের সভাপতি থেকে শুরু করে তিনি ক্রমান্বয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
পরবর্তীতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে সহ-দপ্তর সম্পাদক, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এবং দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
পরবর্তীতে বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনি জীবন বীমা কর্পোরেশনের পরিচালক এর দায়িত্ব পান, বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রাক প্রচার নিরীক্ষণ কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক অবদান:ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-১ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ সহকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সংসদ সদস্য থাকাকালীন তিনি শার্শার শিক্ষা বিস্তার, শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যাপারে ব্যাপক সহযোগিতা, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, কৃষি খাতের আধুনিকায়ন ও কৃষকের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। স্থানীয় উন্নয়ন প্রকল্পে তিনি ছিলেন জনমানুষের পাশে।
মানুষের অভিভাবক:দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে নানা হামলা-মামলা ও দমন- নিপীড়নের শিকার হলেও সততা ও ন্যায়নীতির প্রশ্নে কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি মফিকুল হাসান তৃপ্তি। শার্শার মানুষ তাকে এখনো “জনগণের একমাত্র অভিভাবক” হিসেবে বিবেচনা করে।
তিনি স্থানীয় রাজনীতিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছেন। তার নেতৃত্বে শার্শা উপজেলা বিএনপি সংঘটিত হয়েছে, প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও পৌরসভায় নেতাকর্মীদের পাশে থেকে তিনি সহযোগিতা করেছেন।
ব্যক্তিজীবন:ব্যক্তিগত জীবনে মফিকুল হাসান তৃপ্তি বিবাহিত। তার স্ত্রী শুকরিয়া কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেছেন এবং শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে মহাপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাদের দুই সন্তান—বড় ছেলে হাসান আসফিয়ার অংশু নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ও এমবিএ ডিগ্রি কৃতিত্বের সাথে অর্জন করার পর বর্তমানে শান্তা মরিয়ম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন এবং ছোট ছেলে হাসান আমর অধি কৃতিত্বের সাথে" ডিন অ্যাওয়ার্ড" পেয়ে কানাডার হ্যালিফ্যাক্স শহরের সেইন্ট ম্যারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও ড্যাল হাউজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে বর্তমানে কানাডা অ্যাডমিন্টন এ শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ গবেষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন
সততা ও মূল্যবোধ:রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা নানা সময়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালালেও স্থানীয়রা বলেন, “তৃপ্তি ভাইয়ের গায়ে একফোঁটা কাদা নেই।”
তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কোনো দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি বা সন্ত্রাসের অভিযোগ ওঠেনি। তিনি সর্বদা সত্যের পক্ষে থেকেছেন এবং বিএনপির রাজনীতিকে জনগণের কল্যাণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
আসন্ন নির্বাচন ও মনোনয়ন:আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন প্রক্রিয়া এখন চূড়ান্ত ধাপে। বিএনপি তরুণ নেতৃত্ব, তৃণমূল সংযোগ ও চারিত্রিক গ্রহণযোগ্যতাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে শার্শা আসনে সাবেক সংসদ সদস্য মফিকুল হাসান তৃপ্তি মনোনয়ন প্রত্যাশী।
যুবদল ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা, চার দশকের অভিজ্ঞতা, দলের প্রতি নিষ্ঠা এবং জনগণের অকৃত্রিম ভালোবাসা তাকে আবারও জাতীয় রাজনীতির নেতৃত্বের আসনে দেখতে সহায়ক হবে।
যশোর জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ইমদাদুল হক বলেন,“বিএনপির ঘোষিত মনোনয়ন নীতিমালার আলোকে মফিকুল হাসান তৃপ্তির রাজনৈতিক জীবন ও ব্যক্তিত্ব পূর্ণাঙ্গ মানদণ্ডে উত্তীর্ণ। তাই তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত তার প্রতি সমর্থন রয়েছে।”