নীলফামারি সীমান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খানের সঙ্গে গোপন বৈঠকের উদ্দেশ্যে ভারত পালানোর সময় কুমিল্লার দুই সাংবাদিককে আটক করেছে বিজিবি।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী নীলফামারী সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের আটক করে। এসময় তাদের কাছ থেকে আনুমানিক ২০ লাখ টাকার সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা (ডলার) জব্দ করা হয়।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, এর আগেও এই দুইজনকে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত থেকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়েছিল, তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকায় তখন তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) নিজস্ব সোর্সের সহায়তায় অভিযানে অংশ নেওয়া হয় এবং সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টাকালে দুই সাংবাদিককে আটক করা হয়। পরবর্তীতে তাদেরকে যৌথ বাহিনীর মাধ্যমে একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার (ডিবি) হেফাজতে পাঠানো হয়। বর্তমানে তারা নীলফামারীতে গোয়েন্দা হেফাজতে আছেন এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
আটককৃতদের পরিচয়: ১. শাহজাদা এমরান – ‘আমাদের কুমিল্লা’ নামের একটি সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক। এই সংবাদমাধ্যমটি নাইমুল ইসলাম খানের প্রত্যক্ষ সম্পাদনায় পরিচালিত হয়ে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে।
তরিককুল ইসলাম করুন (ছদ্মনাম) – কুমিল্লার সিডি প্যাড হসপিটালে কর্মরত। নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিলেও তার সাংবাদিকতা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের প্রমাণ সীমিত।
বিশ্বস্ত গোয়েন্দা সূত্র জানায়, আটককৃতদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় নথিপত্র, গোপন বার্তা কিংবা প্রযুক্তিগত ডিভাইস ছিল কিনা তা যাচাই-বাছাই চলছে। তারা কোনো আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের অংশ কি না—সেই বিষয়েও অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।
সরকারের উচ্চ মহলে ইতোমধ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং গোয়েন্দা বাহিনীগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত যেকোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। স্বঘোষিত সাংবাদিক পরিচয়ধারী এই দুই ব্যক্তি আদৌ কোন সংবাদের সঙ্গে যুক্ত, না কি বড় ধরনের চক্রান্তের অংশ—তা এখন রাষ্ট্রীয় তদন্তের আওতায়।