ভারতের নতুন নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি ৯ ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা

ফোরকান জামান ,শার্শা উপজেলা প্রতিনিধি:
ভারতের নতুন নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি ৯ ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা ছবি: ফোরকান
ভারতের নতুন নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি ৯ ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা ছবি: ফোরকান

বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে ৯ ধরনের পণ্য আমদানিতে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত। শুক্রবার (২৭ জুন) ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএফটি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এখন থেকে এসব নির্দিষ্ট পণ্য বাংলাদেশ থেকে ভারতের স্থলবন্দর দিয়ে আর আমদানি করা যাবে না। তবে সমুদ্রপথে আমদানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর নয়। এসব পণ্য কেবল মুম্বাইয়ের নভোসেবা সমুদ্রবন্দরের মাধ্যমে আমদানি করা যাবে।

নিষিদ্ধ ৯ ধরনের পণ্য:

১. কাঁচা পাট

২. পাটের রোল

৩. পাটের সুতা

৪. পাটজাত বিশেষ ধরনের কাপড়

(বাকি পাঁচটির নাম এখনো নির্দিষ্টভাবে প্রকাশ পায়নি তবে একই শ্রেণির পাটজাত ও সংশ্লিষ্ট পণ্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে)

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এই ৯ ধরনের পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৪ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ১৪ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে স্থলবন্দর দিয়ে। অর্থাৎ, মোট রপ্তানির প্রায় ৯৯ শতাংশই হয়েছিল স্থলপথে।

তিন মাসে তিন দফা বিধিনিষেধ:

এটাই প্রথম নয়, চলতি বছরের মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর তিন দফায় বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত।

৯ এপ্রিল ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশের রপ্তানিপণ্য অন্যান্য দেশে পাঠানোর সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয়।

১৭ মে দ্বিতীয় দফায় স্থলবন্দর দিয়ে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক সামগ্রী, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয় এবং কোমল পানীয় আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

সবশেষ, ২৭ জুন তৃতীয় দফায় এ নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো পাটজাত ৯টি পণ্যের ওপর।

নেপাল ও ভুটান রপ্তানিতে ছাড়:

তবে এ নিষেধাজ্ঞার আওতা থেকে বাদ রাখা হয়েছে নেপাল ও ভুটানকে। অর্থাৎ, বাংলাদেশ থেকে স্থলপথ ব্যবহার করে ভারতের মধ্য দিয়ে ওই ৯ ধরনের পণ্য নেপাল ও ভুটানে রপ্তানি করা যাবে।

ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ:

ভারতের এ ধরনের একের পর এক নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের পাটখাত ও সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারকদের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্থলপথই ছিল সবচেয়ে সহজ ও কম খরচের রুট। সমুদ্রপথে রপ্তানি করলে পরিবহন খরচ ও সময় দুই-ই অনেক বেড়ে যাবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের এই পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান না হলে বাংলাদেশের পাটশিল্প আরও সংকটে পড়তে পারে।

এলাকার খবর

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত