মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডার সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা আকস্মিকভাবে বাতিল করেছেন। কানাডার ডিজিটাল পরিষেবা করকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর "স্পষ্ট আক্রমণ" বলে উল্লেখ করে তিনি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কানাডার পণ্যের উপর নতুন আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন।
ট্রাম্প বলেছেন, “এটি সম্পূর্ণরূপে একতরফা ও বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত। আমরা এর বিরুদ্ধে উপযুক্ত শুল্ক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাচ্ছি।” তিনি আরও জানান, দুই সপ্তাহের মধ্যে নতুন শুল্কহার কার্যকর হবে।
এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এলো, যখন মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। তিনি বলেন, “আমরা কানাডার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ ও অন্যান্য প্রধান শুল্ক ইস্যুতে ইতিবাচক অগ্রগতি দেখছি।”
তবে ট্রাম্পের হঠাৎ এই ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার সম্পর্ক আবারও অনিশ্চয়তায় পড়ে গেল। গত মাসে জি-৭ সম্মেলনে দুই দেশের নেতারা ৩০ দিনের মধ্যে একটি নতুন অর্থনৈতিক চুক্তিতে পৌঁছানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন। সেই প্রক্রিয়াকে কার্যত ধাক্কা দিলো ট্রাম্পের এই নতুন অবস্থান।
ডিজিটাল পরিষেবা কর নিয়ে বিরোধ:
ট্রাম্পের ক্ষোভের কেন্দ্রে রয়েছে কানাডার নতুন ডিজিটাল পরিষেবা কর। ১ জুলাই থেকে কানাডা অ্যামাজন (Amazon), মেটা (Meta), গুগল (Google), অ্যাপল (Apple) সহ যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল আয়ে ৩% কর আরোপ করতে যাচ্ছে। এই কর সেই সব প্রতিষ্ঠানের উপর প্রযোজ্য হবে, যারা বছরে ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আয় করে কানাডিয়ান ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে।
এই কর ২০২২ সাল থেকে পূর্ববর্তী সময়ের জন্যও প্রযোজ্য করা হবে, যা ট্রাম্প প্রশাসনের কূটনৈতিক ক্ষোভের একটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অর্থনৈতিক প্রভাব:
ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরপরই মার্কিন শেয়ারবাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। যদিও ট্রেডিংয়ের শুরুতে শেয়ার সূচকগুলি কিছুটা নিম্নমুখী ছিল, দিন শেষে S&P 500 এবং Nasdaq রেকর্ড উচ্চতায় সপ্তাহ শেষ করে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বাণিজ্য যুদ্ধের ঝুঁকি এবং শুল্কের চাপ ভবিষ্যতে ভোক্তা ব্যয় ও উৎপাদন খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, বাণিজ্যনীতির এই ধরনের অপ্রত্যাশিত মোড় বিশ্ববাজারে অস্থিরতা বাড়াতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকেও প্রভাবিত করতে পারে।
সূত্র: রয়টার্স, ব্লুমবার্গ ও হো
য়াইট হাউস প্রেস ব্রিফিং।