দলীয় নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়া নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। বিশেষ করে ‘হাইব্রিড’ এবং ‘নব্য বিএনপি’ পরিচয়ে যেসব ব্যক্তি তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, তাদের তালিকা তৈরি করে শুরু হয়েছে শুদ্ধি অভিযান।
যদিও দলটি আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি স্বীকার করছে না, তবে বিএনপির একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, হাইকমান্ডের নির্দেশে ইউনিয়ন থেকে জেলা পর্যায় পর্যন্ত সকল কমিটি যাচাই-বাছাইয়ের আওতায় আনা হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, “দল ও দেশের স্বার্থে যে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, বিএনপি তা-ই নেবে। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণকারীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, প্রয়োজনে তালিকাও করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতৃত্বে গুণগত পরিবর্তন এনেছেন। যারা অপকর্মে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দলীয় সূত্র অনুযায়ী, গত ১১ মাসে অন্তত পাঁচ হাজার নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার এবং আরও এক হাজার জনকে শোকজ করা হয়েছে। ভোলার তজুমদ্দিন এবং লালমনিরহাটের পাটগ্রামের সাম্প্রতিক ঘটনা এসব পদক্ষেপের অংশ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “অপরাধমূলক কাজ কোনোক্রমেই মেনে নেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগের অপকর্মের পথে কেউ হাঁটলে বিএনপিতে জায়গা হবে না।”
দলের একাধিক নেতা অভিযোগ করেছেন, সরকারপন্থী কিছু ব্যক্তি ছদ্মবেশে বিএনপিতে অনুপ্রবেশ করে অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে। এমনকি টাকা নিয়েও বিএনপিতে ঢোকানোর ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
বিএনপি কিছু এলাকায় নিজেরাই মামলা করে ব্যবস্থা নিয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানিয়েছে।
তবে নেতারা এটাও বলছেন, অনেক ক্ষেত্রেই প্রকৃত ঘটনার চেয়ে অপপ্রচার বেশি হচ্ছে। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে একটি সংঘবদ্ধ চক্র মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করছে।
এই অবস্থায় দলের হাইকমান্ডের অবস্থান স্পষ্ট—শৃঙ্খলা ও জনআস্থা পুনরুদ্ধারে কোনো আপস নয়। শুদ্ধি অভিযান চলবে আরও কঠোরভাবে।