ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক কাউন্সিলের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ছোট ভাই এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিনের ওপর বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে।
শনিবার (১২ জুলাই) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে বালিয়াডাঙ্গী সমীর উদ্দিন কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণা নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ফলাফল ঘোষণার দাবিতে স্থানীয় নেতাকর্মীরা জেলা বিএনপির নেতাদের তিন ঘণ্টারও বেশি সময় অবরুদ্ধ করে রাখেন।
অবরুদ্ধদের মধ্যে ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন। স্লোগান দিতে দিতে বিক্ষোভকারীরা ঘোষণা দেন, ফলাফল না জানা পর্যন্ত কাউকে স্থান ত্যাগ করতে দেওয়া হবে না।
অবশেষে রাত ৯টার দিকে মির্জা ফয়সাল আমিন ফলাফল ঘোষণা করেন। ঘোষণার পরপরই তিনি বাড়ি ফিরতে নিজের গাড়িতে উঠতে গেলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওঁৎ পেতে থাকা বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা তার ওপর চড়াও হয়।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, তাকে লক্ষ্য করে একাধিকবার চেয়ার ও বাঁশ ছোড়া হচ্ছে। তিনি দ্রুত গাড়িতে উঠার চেষ্টা করলেও হামলাকারীরা তার গাড়ি লক্ষ্য করেও হামলা চালায় এবং ভাঙচুর করে। তার সঙ্গীদের সহায়তায় তিনি কোনোমতে রক্ষা পান, তবে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।
মির্জা ফয়সাল আমিনের গাড়ির মালিক ও সফরসঙ্গী মো. রাশেদ বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবে কাউন্সিল শেষ হচ্ছিল। কিন্তু ফলাফল ঘোষণার পর ভাইয়া গাড়িতে উঠতে গেলে হঠাৎ করেই তার ওপর হামলা হয়। আমার গাড়িটিও ভাঙচুর করা হয়েছে।”
ঘটনার পরপরই বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তবে হামলাকারীরা ততক্ষণে পালিয়ে যায়।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শওকত আলী সরকার বলেন, “ফলাফল ঘোষণার পর মির্জা ফয়সাল আমিনের ওপর হামলা হয়েছে। আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। হামলাকারীদের সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।”
এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পলাশ কুমার দেবনাথ বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা তদন্ত করে দায়ীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।”
এই ঘটনার পর এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।