চাঁদাবাজ-দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি এনসিপির

বিশেষ প্রতিনিধি:
চাঁদাবাজ-দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি এনসিপির ছবি: সংগৃহীত
চাঁদাবাজ-দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি এনসিপির ছবি: সংগৃহীত

চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে বড় আন্দোলন আসছে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, “দুর্নীতি যারা করবে, তাদের কোনো ছাড় নেই। সংস্কার ও বিচার ছাড়া নির্বাচন হলে বাংলার মানুষ তা মেনে নেবে না।”

শুক্রবার (১১ জুলাই) যশোর শহরের রেল রোড থেকে জজ কোর্ট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ‘জুলাই পদযাত্রা’র ১১তম দিনের কর্মসূচির শেষভাগে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, “একটি দল আমাদের ‘কোটি কোটি মানুষের কথা বলে’, কিন্তু আমরা দেখিয়েছি—ন্যায়ের সঙ্গে থাকলে মানুষ নিজেরাই পাশে এসে দাঁড়ায়। আমরা দশজন দিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলাম, এখন হাজারো মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই, আমলা-পুলিশ কোনো দলের দাস না হোক। সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্বের পক্ষে কথা বলুক। ডিজিএফআই বা অন্য কোনো সংস্থার কেউ গুমে জড়িত হোক, আমরা তা চাই না।”

নির্বাচন কমিশন (ইসি), দুদকসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে নিরপেক্ষ নিয়োগের দাবি জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, “ইসি যদি জনগণের পক্ষে না থাকে, তবে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। তবে এনসিপি জনগণকে অন্ধকারে যেতে দেবে না। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশপন্থি রাজনীতি করতে চাই।”

পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। বক্তারা অভিযোগ করেন, এনসিপিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ‘নির্বাচনবিরোধী দল’ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ও সংস্কারের পক্ষে কথা বললে একটি রাজনৈতিক দল কষ্ট পায়। আর সংস্কারে যারা বাধা দেয়, তারা যেন আওয়ামী লীগের পাহারাদার।”

এসময় নেতারা ‘বিচার, সংস্কার ও সুষ্ঠু নির্বাচন’—এই তিনটি দাবিকে কেন্দ্র করে ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলনের ইঙ্গিত দেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় হোটেল ওরিয়নে জুলাই আন্দোলনে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। আহতরা অভিযোগ করেন, এক বছর পেরিয়ে গেলেও জুলাই ঘোষণাপত্র, সনদ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের কোনো উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয়নি। এনসিপি নেতারা দ্রুত এসব দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন।

রেল রোড মডেল মসজিদ থেকে শুরু হওয়া পদযাত্রাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জিরোপয়েন্ট মোড়ে পথসভায় মিলিত হয়। দুপুরের প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করে লাল-সবুজ পতাকা হাতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয় যশোর শহর। নেতারা জানান, যশোরে কর্মসূচি শেষ করে খুলনার শিববাড়ি ও খালিশপুর শিল্পাঞ্চলে পথসভা ও গণসংযোগ করবে এনসিপির গাড়িবহর।

তারা বলেন, “জুলাই শুধু একটি মাস নয়, এটি নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণের চেতনার প্রতীক। আমরা সেই চেতনার ধারক হয়ে রাজপথে আছি, থাকবো।”

এলাকার খবর

সম্পর্কিত