যশোর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারসহ চারজনের বিরুদ্ধে স্কুল ও কলেজের এমপিও ভুক্তির নামে ৮৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আঞ্জুমান আরা বেগমের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন কেশবপুর শহীদ লেফটেন্যান্ট মাসুদ মেমোরিয়াল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মশিয়ার রহমান। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী তাহমিদ আকাশ।
মামলায় শাহীন চাকলাদারের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী শামীমা পারভিন রুমা, ব্যক্তিগত সহকারী আলমগীর সিদ্দিকী টিটো ও মাগুরখালী গ্রামের রবিউল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত সময়ে আসামিরা কলেজের স্নাতক শাখা এমপিও ও কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষকদের এমপিও ছাড় করিয়ে দেওয়ার নামে ৬৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা এবং স্কুলের মাধ্যমিক শাখার এমপিও আদেশ করিয়ে দেওয়ার জন্য আরও ২০ লাখ টাকা দাবি করেন।
অভিযোগকারী মশিয়ার রহমান শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেন এবং শাহীন চাকলাদারের পিএস টিটোর যশোর শহরের বাসায় কয়েক দফায় নগদ অর্থ হস্তান্তর করেন।
তবে দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও প্রতিশ্রুত কাজ সম্পন্ন হয়নি। একপর্যায়ে আসামিরা জানিয়ে দেন, কাজ আর হবে না। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে বাদী নিশ্চিত হন, এমপিও আদেশের জন্য কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি এবং আসামিরা টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
মামলায় আরও বলা হয়, টাকা ফেরতের দাবি জানালে আসামি টিটো ও তার স্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে টাকা ফেরত দেওয়া হবে না এবং হুমকি দেন, “আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসছে”—এই বলে ভয়ভীতি দেখান বাদীকে।
ঘটনার প্রায় তিন বছর পর সাহস সঞ্চয় করে তিনি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন বলে জানান।
এ মামলার মাধ্যমে যশোর রাজনীতিতে নতুন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মামলার ফলাফল ও তদন্ত প্রতিবেদন সামনে এলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।