রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছেন জুলাই আন্দোলনে আহত কয়েকজন ব্যক্তি। সহায়তার দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ পেতে বিলম্ব হওয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে এ হামলা চালান বলে জানিয়েছেন ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামাল আকবর।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে সংঘটিত এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। দুই মিনিটের বেশি সময়ের ভিডিওটিতে কয়েক যুবককে দরজায় লাথি ও স্ক্র্যাচ দিয়ে আঘাত করতে এবং ফাউন্ডেশনের কাউকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করতে দেখা যায়। একপর্যায়ে একজনকে বলতে শোনা যায়, "তালাডা খোল, তালাডা খোল, এই লাডিডা দে তো।" অন্যজন চিৎকার করে বলেন, "আমাদের জীবন শেষ," এবং কেউ একজন চেয়ার উঁচিয়ে ধরেন আক্রমণের ভঙ্গিতে।
এ বিষয়ে কামাল আকবর জানান, “আহতদের সহায়তার দ্বিতীয় ধাপের টাকা বিতরণের ক্ষেত্রে কিছু বিলম্ব হচ্ছে। কারণ এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তহবিল থেকে অধিকাংশ অর্থ শহীদ পরিবার ও গুরুতর আহতদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে সহায়তা দেওয়ার আগে সঠিক যাচাই ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করতে সময় লাগছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা বিভিন্ন উৎস থেকে তহবিল পেয়েছি—প্রধান উপদেষ্টার তহবিল থেকে ১০০ কোটি, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৫ কোটি এবং ব্যক্তিগত উৎস থেকে আরও ৫ কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত ৮০৫ জন শহীদ পরিবারের সদস্যকে ৫ লাখ টাকা করে এবং প্রায় সাড়ে ছয় হাজার আহতকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে যে তহবিল রয়েছে, তা দিয়ে সবার চাহিদা পূরণ সম্ভব হচ্ছে না।”
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন ২০২৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই ফাউন্ডেশন ছাত্রজনতার আন্দোলনে নিহত ও আহতদের আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসনে কাজ করছে।
কামাল আকবর বলেন, “আহতদের মানসিক অবস্থা, আর্থিক অনিশ্চয়তা ও দীর্ঘ অপেক্ষার কারণে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন—যা মানবিকভাবে বুঝে নেওয়া যায়। তবে, আমাদের দিক থেকেও কাজটি যেন নির্ভুল ও স্বচ্ছ হয়, সেটা নিশ্চিত করতে সময় দরকার।”